৬৪-৬৫ সালের বঙ্গবন্ধুর কারাগার জীবন নিয়ে চরম বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তোফায়েল আহমদ জাতীয় সংসদে কোন ধরনের সূত্র ছাড়াই বলে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু ৬৪ ও ৬৫ সালে বিভিন্ন মেয়াদে ৬৬৫ দিন কারাগারে ছিলেন। তার বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রথম আলো, এনটিভি, একুশে টিভিও একই তথ্য দিয়েছে। দুই বছরে ৭৩০ দিন ধরা হলে এই দুই বছরে তিনি মুক্ত ছিলেন মাত্র ৫৫ দিন। হ্যা একটি সূত্র আছে। ১৭ মার্চ ২০২১ সালে প্রকাশিত ‘হান্ড্রেড ইয়ার্স অব মুজিব’ গ্রন্থে ‘মোকাম্মেল হোসেন’ যে হিসেব দিয়েছেন তাতে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু ১৯৬৪ সালে ১০ মাস, ১৯৬৫ সালে ১ বছর কারাগারে ছিলেন। হতে পারে তিনি তোফায়েল আহমদের তথ্য ব্যবহার করেছেন বা তোফায়েল আহমদ তার তথ্য ব্যবহার করেছেন। জাতীয় সংসদ ও একটি বইয়ে এই জাতীয় তথ্য বঙ্গবন্ধু জীবনীকে বিভ্রান্ত করবে কেবল।

১৬ এপ্রিল, ২০২১ এ যুগান্তর লিখেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কারাগারেই কাটিয়েছেন প্রায় ৪ হাজার দিন। কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র গুরুত্বপূর্ণ এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। জানা যায়, বঙ্গবন্ধু ২৬ বার কারাবরণ করেন। বিভিন্ন কারাগারে তিনি জীবনের মূল্যবান ৩ হাজার ৯৭৯দিন কাটিয়েছেন, যা বছর হিসাব করলে প্রায় ১১ বছর। এর মধ্যে ১৯৬৪ ও ৬৫ সালের তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এ দু’বছরের তথ্য পাওয়া গেলে বঙ্গবন্ধুর জেলজীবনের সময়সীমা আরও বাড়বে। দেশের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ছাড়াও বঙ্গবন্ধু রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। তোফায়েল আহমদ এবং মোকাম্মেল হোসেন কোন সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে বললেন ৬৪, ৬৫ সালে বঙ্গবন্ধু ৬৬৫ দিন কারাগারে ছিলেন?

কারাগারের রোজ নামচায় বলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ৬৪ সালের ডিসেম্বরে একবার গ্রেফতার হন, ৬৫ সালে একবার গ্রেফতার হয়ে জামিনে মুক্তিপান। বিডিনিউজ ২৪. কম বলেছে, বঙ্গবন্ধু ৬৪ সালের ডিসেম্বরে ১বার গ্রেফতার হন। আমাদের কাছেও ৬৪, ৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার হওয়ার সঠিক তথ্য নেই। তবে ৬৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সভা, বিবৃতির একটি পরিসংখ্যান আছে যা থেকে প্রমাণিত হয় কারাগারের রোজ নামচা ও বিডি নিউজ ২৪. কম, যুগান্তরের এর তথ্যই কাছাকাছি সঠিক। তথ্যগুলো তুলে ধরা হলো।

৬৪ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় দাঙ্গার সৃষ্টি করা হয়। ১৬ জানুয়ারি তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার সভাপতিত্বে শেখ মুজিবসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এক সভায় মিলিত হয়ে ‘দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি’ গঠন করেন ও ১৭ জানুয়ারি একটি ইশতেহার প্রকাশ করেন। সরকার এই ইশতেহার প্রকাশের দায়ে ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ’৬৪ সালের ৩০ এপ্রিল। ৬৪ সালের ৬ মার্চ আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হয় মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগিশের সভাপতিত্বে। এতে বক্তব্য দেন শেখ মুজিব..। আওয়ামী লীগের .. শেখ মুজিবুর রহমান .. এক যুক্ত বিবৃতিতে ১৭ ও ১৮ মার্চ ভোটাধিকার দিবস পালনের আহ্বান জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে ৬৪ সালের ২৭ মার্চ শেখ মুজিব অব্যাহত গ্রেফতারের নিন্দা করে বিবৃতি দেন। ২৯ মার্চ পল্টনে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির সভায় শেখ মুজিব ঘোষণা দেন, শান্তিপূর্ণভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলন চলবে। ৬৪ সালের ২ এপ্রিল ছাত্র আন্দোলনের খবর প্রকাশের দায়ে সরকার ‘দৈনিক আজাদ’ পত্রিকা হতে ৩০,০০০ টাকা জামানত তলব করে। ৩ এপ্রিল এক বিবৃতিতে শেখ মুজিব নির্যাতনের মধ্যে মাত্র ৩টি পত্রিকা বেছে নেয়া হয়েছে কেন সরকারের কাছে জিজ্ঞাসা করেন। ৯ এপ্রিল হতে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রদেশ সফরে বের হন। এদিন চট্টগ্রামে জেএম সেন হলে শেখ মুজাফ্ফর আহমদের সভাপতিত্বে এক সভা হয়। বক্তব্য দেন শেখ মুজিব..। ১০ এপ্রিল লালদীঘিতে শেখ মুজাফ্ফর আহমদের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সভায় প্রত্যক্ষ ভোট ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দাবিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় বক্তব্য দেন শেখ মুজিব..। শেখ মুজিব এপ্রিল মাসে সিলেট, বরিশাল, ফরিদপুরসহ প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে জনসভা করেন। পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিরোধী প্রার্থীকে বাদ দেবে এ আশঙ্কায় ৫ মে এক বিবৃতিতে শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী না দিয়ে প্রত্যক্ষ ভোটের জন্য আন্দোলনের আহবান জানান। ৩১ মে শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে পরে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। শেখ মুজিব এর পূর্বে এ মাসে বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, চাপাইনবাবগঞ্জসহ প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে সভা করেন। ’৬৪ সালের ১২ জুলাই আওয়ামী লীগ জুলুম প্রতিরোধ দিবস পালন করে ও এ উপলক্ষে পল্টনে জনসভা করে। এ সভায় শেখ মুজিব তার ভাষণে দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনার তথ্য দিয়ে বলেন এই পরিকল্পনায় পশ্চিমের জন্যে ৩৩০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ হলেও পূর্বের জন্যে ব্যয় হবে মাত্র ৯৫০ কোটি টাকা। শেখ মুজিব ৬৪ সালের ২ আগস্ট করাচিতে বলেন, জাতীয় স্বার্থেই বৈষম্য দূর করা উচিত। ২৯ সেপ্টেম্বর সারা দেশে হরতাল পালিত হয়। ঢাকায় পল্টনে ভাসানীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন শেখ মুজিব..। ১৭ অক্টোবর লালদীঘিতে মিস্ জিন্নাহর সভা হয়। সভায় বক্তব্য দেন .. শেখ মুজিব..। সংবাদগুলো দৈনিক আজাদ ও ইত্তেফাক থেকে নেয়া। জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এইসব সংবাদ নিশ্চিত করে যে এই সময়ে শেখ মুজিব মুক্ত ছিলেন । ৩১ মে গ্রেফতার হয়ে জামিনে মুক্তি পান। তাকে জেলে থাকতে হয়নি।

৬৫ সালের ৭ এপ্রিল ছাত্রলীগ বন্দী মুক্তি দিবস পালনের আহবান জানায়। ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র শক্তি ও বিভিন্ন কলেজ ছাত্র সংসদ এ দিবসকে সমর্থন করে। ঐদিন ঢাকায় ফেরদৌস কোরেশীর সভাপতিত্বে এক ছাত্র সভা হয়। বক্তব্য দেন ডাকসু সাধারণ সম্পাদিকা মতিয়া চৌধুরীসহ অনেকে। সভায় কাজী জাফর আহমদ, রাশেদ খান মেনন, শেখ ফজলুল হক মণি, ওবায়দুর রহমান, হায়দর আকবর খান রনো, সিরাজুল আলম খান, মহিউদ্দিন আহমদ, আইয়ুব রেজা চৌধুরী, বদরুল হক, রেজা আলী, আল মোজাহেদী, আবদুর রাজ্জাক, আলী আকবর, হায়দর খানসহ সবার মুক্তি দাবি করা হয়। লক্ষ্যণীয় শেখ মুজিবের মুক্তি দাবি করা হয়নি। মানে দাড়ায় শেখ মুজিব জেলে ছিলেন না, থাকলে ছাত্রলীগের বন্দীমুক্তি দিবসে শেখ মুজিবের মুক্তি দাবি করা হবে না তা কি হয়? ৬৫ সালে শেখ মুজিবের গ্রেফতারের কোন সংবাদ নেই, হলেও তা পত্রিকায় আসেনি বা আমাদের নজর এড়িয়ে গেছে। কিন্তু একটা বিষয়তো নিশ্চিত জাতীয় সংসদে দেয়া তোফায়েল আহমদের বিবৃতি এবং মোকাম্মেল হোসেনের লেখাটি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তাই এটা জাতীয় সংসদ বিবরনী থেকে বাদ দেয়া প্রয়োজন। লেখাটি সংশোধন করা দরকার। এই প্রসঙ্গে একটি কথা না বললেই নয়। আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের একটি ধারণা যে, বঙ্গবন্ধু বেশি দিন কারাগারে ছিলেন তাই তিনি নেতা হয়েছেন। একারণে বঙ্গবন্ধুর কারাগার নিয়ে তারা একের পর এক তথ্য দিয়ে চলেছেন। রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে এটা নিয়ে। এই প্রতিযোগিতায় সামিল হতে গিয়ে ৬৯ গণঅভ্যুত্থানের নেতা তোফায়েল আহমদ এমন ভুলটি করলেন। কারাগারে বেশিদিন থাকলে নেতা হওয়া যায় বা নেতাদের বেশি দিন কারাগারে থাকতে হয় ধারণাটি যৌক্তিক বলে মনে হয় না। কারাগারে আরো অনেক নেতা দীর্ঘ বছর ছিলেন। তাদের অনেকে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতা হওয়া সত্বেও কেউ ৬৯-৭০ সালে এসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের একক নেতায় পরিণত হতে পারেননি, কেউ মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু কারাগারে দীর্ঘদিন কাটিয়ে তার অপ্রতিরোধ্য মনোবলের প্রমাণ দিয়েছেন এটা সত্য কিন্তু এর কারণে তিনি শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু ও জাতির পিতা হয়েছেন এমনটা মনে করার কারণ নেই। আরো বিশেষ অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে একটি হলো জনগণের মনে কথা বুঝতে পারার ক্ষমতা এবং সে অনুযায়ী কর্মসূচি দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে ধীরে ধীরে এগোনো। জনমতকে প্রভাবিত করে আবারো আরো উন্নত কর্মসূচি দেয়া এবং জনগণকে সাথে নিয়ে চলা, কর্মসূচির লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট করে তার পক্ষে আপোষহীন থাকা। এই কাজটি আর কোন নেতা করতে পারেননি। ৪৭ সাল থেকে ৭১ সাল পর্যন্ত আপোষহীন নেতা হিসেবে টিকে ছিলেন কেবল তিনি। আরেক আপোষহীন নেতা মৌলানা ভাসানী ৬৩, ৬৪ সালে আইয়ুব খানকে সমর্থন করে আপোষহীনতার দৌড়ে পিছিয়ে গেছেন। আপোষহীন নেতাদের পিছনে ছাত্র যুবকদের ভিড় বাড়ে। রাজনৈতিক দুরদর্শীতার বিচারেও তিনি ছিলেন অনন্য। ৪৮ ভাষা আন্দোলনে তার সমসাময়িক নেতারা যখন খাজা নাজিমের চুক্তির পর আনন্দিত ছিলেন এবং মনে করেছিলেন বাংলা রাষ্ট্রভাষা হয়ে যাচ্ছে, তখন তিনি ধারণা করেছেন মুসলিম লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন বাংলা রাষ্ট্রভাষা হবে না, বাঙালির কোন দাবি আদায় করা যাবে না। তাই ৪৮ ভাষা আন্দোলনকে তিনি মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে সচেষ্ট ছিলেন এবং ভাষা আন্দোলনের নেতাদের অমতে দলবল নিয়ে প্রাদেশিক পরিষদ ভবন ঘেরাও করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৪৮ সালের চিন্তার বাস্তবতা আমরা দেখতে পাই। ৬দফা ছিল জাতিকে স্বাধীনতার পথে পরিচালিত করতে তার দুরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি। এটা প্রমাণিত। ৭০ সালে এলএফও মেনে একক ভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত ছিল দুরদর্শী সিদ্ধান্ত। ৭ মার্চ সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া এবং পাকিস্তান বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হলে কি কি করতে হবে তা ঘোষণা দেয়া তার রাজনৈতিক দুঃসাহসিকতা ও দুরদর্শীতার প্রমাণ। ৭ মার্চে তার এই ঘোষণার পর পরই দেশের দোদুল্যমান সামরিক-বেসামরিক আমলাসহ সব পেশার লোকদের বঙ্গবন্ধুর পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সবচাইতে দুরদর্শী সিদ্ধান্ত ছিল হানাদার বাহিনীর সিদ্ধান্ত কি হবে তা জানা সত্বেও তাদের সাথে আলোচনা চালিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণ করা, বাঙালি জনগণ শান্তি চায় তাই আলোচনায় তাদের আপত্তি নেই। চরম সাহসী দুরদর্শী সিদ্ধান্ত ছিল হানাদারদের হাতে গ্রেফতার হওয়া। হানাদাররা কিন্তু গ্রেফতার করেছিল পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে। ফলে বিশ্ব দ্রুত বাংলাদেশের পক্ষে আসে। তিনি হানাদারদের হাতে নিহত হতে পারেন জেনেও গ্রেফতারের জন্য অপেক্ষা করার চাইতে দুসাহসী কাজ আর কি হতে পারে? যাওয়ার আগে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে তিনি তার আরেকটি দুরদর্শী কাজ সেড়ে নেন। কারাগারের তথ্যের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর কর্মকান্ডের এইসব বিষয় আরো বিস্তারিত তুলে ধরলেই কেবল বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে জানা যাবে।

আরো আছে, বাংলাদেশের রাজনীতির সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ৬৬ থেকে ৬৯। বঙ্গবন্ধু ৬৬ সালের ৮ মে জেলে গেলেন, বেরোলেন ৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। এই সময়ে ভিতর ছাত্রলীগ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটি করে দুই ছাত্র ইউনিয়ন এমনকি এনএসএফ এর একটি অংশকে যুক্ত করে, ৬ দফা সংযুক্ত করে ১১ দফা রচনা করে। আওয়ামী লীগের যারা ৬ দফায় বিশ্বাস করতেন না তাদের বের করে দেয়া হয়। ৬ দফার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হয়। তোফায়েল আহমদ ডাকসু ভিপি হন। তিনি ৬৯ গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ‘ডাক’ এর সভায় সভাপতিত্ব করে জনাব তোফায়েল ‘ডাক’ নেতাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেন, শেখ মুজিবকে মুক্ত করে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেন। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের অন্যতম একজন নেতা তোফায়েল আহমদ। সেই সময়ের কৌশলী ও সাহসী আন্দোলনগুলোতে কারা কারা ছিল, তারা বঙ্গবন্ধুর কোন কোন গুণে আকৃষ্ট হয়ে এমন সাহসী ও কৌশলী ভূমিকা পালন করতে পেরেছিলেন সেটা যদি তোফায়েল আহমদ সাহেব বলেন তবেই বঙ্গবন্ধুকে চেনা আরো সহজ হবে সংশ্লিষ্টজনদের ধারণা। বাংলাদেশের আর কোন নেতা এমন হাজারো যোগ্য অনুসারির সৃষ্টি করতে পারেননি। তোফায়েল আহমদের কাছে তাই তাদের অনুরোধ ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী শুধু নয়, ইতিহাস সৃষ্টিকারিদের অন্যতম হিসেবে ৬৬-৬৯ সালের সত্যগুলো তুলে ধরার।

বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন জেলগুলো থেকে আজ হোক কাল হোক বের করা যাবে। কিন্তু ৬৬-৬৯ এর আসল ইতিহাস জাতিকে জানাতে হলে এই ইতিহাসে জড়িত ব্যক্তিদের সত্য বলার কোন বিকল্প নেই বলে তারা মনে করেন।